বেকারি শিল্প: বাঙালীর একটি অধরা ব্যবসা

বেকারি শিল্প: বাঙালীর একটি অধরা ব্যবসা

শ্রীপর্ণা বন্দ্যোপাধ্যায়

 

বাণিজ্যে বসত লক্ষ্মী

 একটি পুরোনো প্রবাদ। আমরা চাঁদ সওদাগরের নাম শুনেছি। তারও আগে বাণিজ্যসুত্রে শ্রীলঙ্ক, ব্রহ্মদেশ বা মায়ানমার, থাইল্যান্ড, সুমাত্রা, বোর্নিও, ইন্দোনেশিয়া ইত্যাদি বহু এশিয়া মহাদেশীয় দ্বীপে বাঙালীর বাণিজ্যপোত গিয়ে সাফল্যের সঙ্গে বাণিজ্য করে এসেছে। হিন্দুরা সাম্রাজ্যবাদী নয়। তাই সেসব জায়গায় উপনিবেশ স্থাপন করে সেখানকার নিজস্ব ঐতিহ্য ও শিল্প নষ্ট বা দখল কোনওটাই করেনি। সততার সঙ্গে বাণিজ্য করেছে। সওদাগরশব্দটা আরবী বা ফারসী বলে আমার অনুমান মুসলিম শাসনকালেও আমরা বাণিজ্য করতে গিয়েছি। পরে ইংরেজ আমল থেকে ইংরেজী শিক্ষা ও পাশ্চাত্য জ্ঞানবিজ্ঞানের সংস্পর্শে আমরা যেমন বহির্বিশ্বের সঙ্গে সহজে যুক্ত হতে পেরেছি, কিন্তু সেই সঙ্গে ব্যবসা বাণিজ্যের চেয়ে আমাদের চাকরি বিশেষত সরকারি চাকরির দিকে ঝোঁক বেড়েছে। ব্যবসার ঝুঁকি খুব সাহসী কিংবা বাধ্য না হলে আমরা নিতে চাই না।

 

বেকারি শিল্প কেন?:

 () এই কেক পাউরুটি বান বিস্কুটের বাজারটাতে প্রায় পুরোপুরি একটি গোষ্ঠীর একাধিপত্য। হালাল সার্টিফিকেশনের নামে তারা মাংস থেকে একাধিক পণ্যে নিজেদের একচেটিয়া কারবার চালাচ্ছে। হিন্দুরা অনেকে গোমাংসেও আপত্তি করেনি। কিন্তু অর্থনৈতিক দখলদারী ও সাম্প্রদায়িক জুলুমবাজির জেরে এখন হিন্দুদের সচেতনতা বেড়েছে। ঝটকা মাংসের দাবি শুধু ধর্মবিশ্বাস নয়, অর্থনীতির একাধিপত্য দূর করতেওবেকারি শিল্পে হিন্দুদের অংশগ্রহণ প্রায় নেইই যেটা বাড়ানো দরকার

কিন্তু শুধু কি তাই?

() এর সঙ্গে স্বাস্থ্য ও রুচির প্রশ্নটাও উঠে এসেছে করোনা কালীন সংকটে বেশ কিছু নোংরামোর ছবি উন্মোচিত হয়েছে। এমনিতেই সবাই আচার বিচারের ধার ধারে না, পাপবোধ সবার এক নয়ভিন্ন সম্প্রাদায়ের খাবারে নিষ্ঠীবন থেকে মানব শরীরের সব রকম বর্জ্য মেশানোর ঘটনাও হাতেনাতে ধরা পড়েছে। তাই খাবার সময় রুচি ও বিশ্বাসের প্রশ্নটা স্বাভাবিকভাবেই ওঠে। তাছাড়া ছোটখাটো বেকারিতে এখনও পায়ে করে ময়দা মাখা হয়। সুতরাং বিশ্বাসযোগ্য মানুষের বানানো পরিচ্ছন্ন ও স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্য পাওয়াটা বিলাসিতা নয়, প্রয়োজন।  

() আয়ের সম্ভাবনাও উজ্জ্বলসব ব্যবসা মার খেতে পারে, কিন্তু খাদ্য উৎপাদন শিল্প যে কোনও পরিস্থিতিতেই অপরিহার্য

 

বেকারি পণ্য কী কী

 পাউরুটি, বিস্কুট/কুকি, কেক, পেস্ট্রি, বান, ক্রীমরোল, পিৎজ়া বেস, পাও, বার্গার বান, ডোনাট...

 


কোন কোন পণ্য অগ্রাধিকার পাবে?

 কেক পেস্ট্রি ক্রীমরোল ইত্যাদি সবেরই বাজার আছে। কিন্তু পাউরুটিবিস্কুট প্রায় নিত্য প্রয়োজনে পড়ে। তবে এখানে মেয়েরা অনেকেই ঘরে ভালো কেক বানাতে পারে। তাই প্রাথমিকভাবে যে যার মতো ব্যবসা করতেই পারে। কিন্তু পাউরুটি বানাতে গেলে কিছু যান্ত্রিক আয়োজন অত্যাবশ্যক।


 অংশগ্রহণ ও বাণিজ্যিক শৃঙ্খল

 এর দুটো দিক আছে

        ১) একটা ব্যবসা আরও কতগুলো আনুষঙ্গিক ব্যবসার সহায়ক হয়ে ওঠে। বেকারির কাঁচামাল (ময়দা, আটা, চিনি, ইস্ট, বেকিং পাউডার ইত্যাদি) এবং যন্ত্র ও যন্ত্রাংশ (পরে বিবরণ দিয়েছি) ক্রয়; রিটেল আউটলেট, কফিশপ ও রেঁস্তোরা প্রতিষ্ঠা, রাঁধুনি, অন্যান্য কর্মী – এই পুরো বাণিজ্যিক শৃঙ্খলের প্রতিটি স্তরে নিজেদের পরিবার বিশেষত মেয়েদের অংশগ্রহণ থাকবে। যতই দক্ষ হোক বাইরের কাউকে রাখা হবে নাপ্রসঙ্গত জৈন ও শিখ আমাদের সমাজেরই এক একটি উপাংশ যারা সৌহার্দ্যপূর্ণ সহাবস্থান করে এর মধ্যে যন্ত্রপাতি কিনতে গেলে হয়তো ওপেন টেন্ডারিং-এ যেতে হতে পারে। সেখানেও অগ্রাধিকার পাবে নিজেদের নির্মাতারাই।

(২) সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত যেসব মেয়ে বা পুরুষরাও কেক বানাতে পারে, তাদের এই বেকারি কোম্পানির আওতায় আনতে হবে। সেটা কেক পেস্ট্রি সাপ্লায়ার হিসাবে হতে পারে, কিংবা যে নিজের কেক শপ চালাচ্ছে তাকে অন্যান্য জিনিস সরবরাহ করেও হতে পারে।

নিজেদের মধ্যে থেকে মানবসম্পদ বেছে পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট সবাই ব্যক্তিগত সমষ্টিগতভাবে উপকৃত হওয়াই উদ্দেশ্য


  বিপণন

 বাই, বিশেষত শহুরে জনতা যারা নিয়মিত বেকারি দ্রব্য ব্যবহার করে। সেখানে কোনও ছাড়াছাড়ি নেই। আপাতত ভারতীয়,পরে দেখা যাবে। নিজস্ব আউটলেট বা রেস্তোঁরা ছাড়াও দোকানে দোকানে, শপিং মলে সাপ্লাই করার অর্ডার ধরতে হবে। শুরুতেই নিজস্ব দোকান খুলে বসা সম্ভব না হলে যথাস্থানে সরবরাহের বরাত তো ধরতেই হবে।

 প্রস্তাবিত বিশেষত্ব (USP): পরিচ্ছন্ন স্বাস্থ্যসম্মত, ন্যায্যমূল্য  ও সুস্বাদু


 

বেকারি ব্যবসা শুরুর প্রক্রিয়া

ভারতে এই ব্যবসার জন্য যে জিনিসগুলো করা দরকার সেগুলোই ধাপে ধাপে বলছি। উৎপাদন থেকে বিপণন পর্যন্ত পুরো প্রক্রিয়ায় অর্থাৎ জমি কেনা বা লীজ নেওয়া, কারখানা স্থাপন ও যন্ত্রপাতি কেনা থেকে বিপণনী পর্যন্ত মোটামুটি ১৫ লক্ষ বিনিয়োগ টাকা ধরে নামতে হবে। জায়গার হেরফেরে খরচ বদলাতে পারে। 

ধাপগুলো হল:

 

. বেকারি ব্যবসা পরিকল্পনা:

 যেকোনও ব্যবসার ক্ষেত্রেই নির্দিষ্ট পরিকল্পনা লাগে। এর উদ্দেশ্য উৎপাদন থেকে বিপণন পর্ষন্ত কর্মসূচী স্থির করা, বাজেট নির্ধারণ করা এবং ভবিষ্যতে উন্নয়ন বা বৃদ্ধির পথ খোলা রাখাএর মধ্যে সচরাচর থাকে:

. পরিকল্পনার সারসংক্ষেপ

. ব্যবসার সামগ্রিক রূপরেখা

. ইন্ডাস্ট্রি বা বাজার বিশ্লেষণ (ভূমিকাতেই বলেছি, অর্থাৎ বাজার বা চাহিদা আছে যেটা হিন্দুরা সেভাবে কাজে লাগায়নি)

.  SWOT Analysis (Strength, Weakness, Opportunity & Threats) ক্ষমতা, দুর্বলতা, সুযোগ বিপদ

. কর্মসূচী পরিকল্পনা করা (পরবর্তী আলোচনায় স্পষ্ট হবে)

. আর্থিক বিশ্লেষণ পরিকল্পনা

. বিপণন পরিকল্পনা

এই প্রতিটি পরিকল্পনাই কীভাবে সম্পন্ন করতে হবে, সেসব পরবর্তী পর্যায়ে আলোচনা করব, যদি সত্যিই আগ্রহ উদ্যোগ আসে

 

. জায়গা বাছাই:

দোকান বা রেস্তোরাঁ শহরের জনবসতিপুর্ণ এলাকা, শপিং মল বা বড় রাস্তার কাছাকাছি হলেই সবচেয়ে ভালো। তবে সেটা নিজের সামর্থ্য ও স্থানের উপলভ্যতার ওপর নির্ভর করছে। যেগুলো মাথায় রাখতে হয়

. রাস্তার ওপর সহজগম্য ও চোখে পড়ার মতো জায়গা, প্রবেশ দ্বার একতলায় হলেই ভালো;

. অন্তত ৫০০ স্কোয়ার ফুট মতো জায়গা। দুটো অংশে বা তলে বিভাজিত হতে হবে যার এক অংশে রান্নার কাজ হবে ও অন্য অংশে বেকারি দ্রব্য বিক্রির জন্য সাজিয়ে রাখা থাকবে;

. যদি ১০০০ স্কোয়ার ফুট দ্বিতল জায়গা পাওয়া যায়, বড় শহরে তার ভাড়া মাসে ৬০-৭০ হাজারের বেশি হওয়ার কথা নয়। শহরতলিতে ভাড়া নিশ্চয়ই কম হবে। নিজের বাড়িকে কাজে লাগানো গেলে তো খুব ভালো। না থাকলে জায়গা পেতে ১,৮০,০০০-,০০,০০০ টাকা মতো লাগতে পারে। এটা সম্পূর্ণ কোথায় লোকেশন তার ওপরনির্ভর করছে।

. জায়গাটার জলের সরবরাহ ও নিকাশী যেন ভালো হয়;

. ভাড়া নেওয়ার সময় সম্পত্তির মালিকের কাছ থেকে রান্নাবান্না ও বেক করার জন্য No Objection Certificate (NOC) নিয়ে আইনি চুক্তি করে নেওয়া দরকার।

 

. প্রয়োজনীয় লাইসেন্স:

 বেকারি ব্যবসার জন্য ৫ রকম লাইসেন্স নিতে হয়:

ক. Food License/ FSSAI license: সরাসরি কেন্দ্র সরকারের www.fssai.gov.in এই ওয়েবসাইটে অনলাইন আবেদন করা যায়, কিংবা কোনও এজেন্সির মাধ্যমে পাওয়া যায়। পুরো কাগজপত্র তৈরি করতে এজেন্সিরা ৫০০০-৬০০০ টাকা নিয়ে থাকে। ১ বছরের জন্য নিতে পারেন। তবে এবসাথে ৫ বছরের জন্য নিয়ে রাখলেই সুবিধা। ৫ বছরের জন্য FSSAI licenses ফী লাগে ১৫,০০০ টাকা ফুড লাইসেন্স পাওয়ার পদ্ধতি সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর আলোচিত হবে। শুধু উৎপাদন করে দোকানে সরবরাহ করা হবে না রেস্টুরেন্ট বা কফিশপ খোলা হবে, সেটাও এই পর্যায়েই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।   

খ. GST Registration: এটা পেতে গেলে একজন Charted Accountant-এর সাহায্য লাগবে। এটাও সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর আলোচনা করা হবে।

গ. Local Municipal Corporation Health License: স্থানীয় পৌরসভা বা কর্পোরেশন যেখানে যা প্রযোজ্য, সেখান থেকে স্বাস্থ্য সুরক্ষার লাইসেন্স ফী পড়ে মোটামুটি ৩,০০০ টাকা। বর্তমান দর দেখে নিতে হবে। আমাদের এটাই USP

ঘ. Eating House license from Police: স্থানীয় থানার কাছ থেকে পেতে হবে

ঙ. Fire License: পৌরসভার/ দমকলের কাছে এই লাইসেন্স পেতে ১৫০০-২০০০ টাকা ধরে রাখুন।

এগুলোর মধ্যে প্রথম ৩টি ব্যবসা শুরুর আগেই পেতে হবে। শেষের দুটি বেকারি খোলার পরেও নেওয়া যেতে পারে। তবে শুরুতেই সবকটি নিয়ে রাখা ভালো।

এগুলোর মধ্যে প্রথম ৩টি ব্যবসা শুরুর আগেই পেতে হবে। শেষের দুটি বেকারি খোলার পরেও নেওয়া যেতে পারে। তবে শুরুতেই সবকটি নিয়ে রাখা ভালো।

 

. জনসম্পদ বা কর্মী আহরণ:

এখানেই একটি সংস্থা তথা সংগঠনের দায়িত্ব ও পারস্পরিক সংযোগ সহযোগিতার বিশেষ ভূমিকা। এর জন্য দক্ষ ও বিশেষজ্ঞ কর্মী (expert workforce) লাগবে। শুধু সুস্বাদু খাবার বানালেই হল না, উপস্থাপনা বা সাজানো (cake decoration), সেটাও দেখা দরকার। আবার শুধু পাঁচরকম কেক বানাতে জানা মেয়ে হলেই হবে না, পাউরুটি বানানো শিখতে হবে। সঙ্গে সম্ভব হলে অন্যান্য স্ন্যাকস্‌।

যে পদগুলোর সন্ধান পেয়েছি প্রধান ও সহকারী রাঁধুনি, সাহায্যকারী, পরিবেশনকারী, কাউন্টারের বিক্রতা, ক্যাশিয়ার। ইন্টারনেটে এগুলো পেয়েছি:  Head Chef, Chef De Partie, Commis/Basic Chef, and Helpers, Service Girls/Boys and a Cashier. তবে আমাদের মধ্যে এই পদগুলোর সামান্য অদল বদল হতেই পারে, একই ব্যক্তিকে একাধিক ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে হবে হয়তো। কিংবা একই ভূমিকার একাধিক ব্যক্তিকে সুযোগ করে দিতে হবে। মোটামুটি আকারের বেকারি ও কফিশপের জন্য ১৫ জন দরকার হয়।

এদের মাইনে কী হবে, যারা নিয়মিত ঘরোয়া পদ্ধতিতে তৈরি আইটেম সাপ্লাই দেবে তারা কী দাম রাখবে – এসব ব্যবসা শুরুর সময় স্থির করে নিতে হবে। একটা প্রাথমিক ধারণা ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহ করা গেলেও এটা নিজেদের প্রয়োজনে কাস্টোমাইজ় করতে হবে। 

 

. প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি

এর জন্য খরচ আছে। অধিকাংশ স্টেইনলেস স্টীলের তৈরি হয়। প্রধান যন্ত্রপাতিগুলো হল প্ল্যানেটারি মিস্কার, ওভেন, ফ্রীজ সম্ভব হলে পৃথক ডীপ ফ্রীজ ও কূলিং ফ্রীজ, কাজের টেবিল, গ্যাস সংযোগ, গ্যাস ওভেন, সিলিন্ডার, রাখার বসানপত্র ইত্যাদি। যন্ত্রপাতি নতুন হলেই ফল উৎকৃষ্ট হবে। অন্যথায় সেকেন্ড হ্যান্ড। আমাদের মধ্যে যারা ঘরোয়াভাবে বানাবে, তারা নিজেদের বাসনপত্রেই কাজ চালাতে পারে। কতটা কী করব তার ওপর নির্ভরশীল।  

 

. সাজানোর আসবাব:

 প্রদর্শনটা আকর্ষণীয় হতে হবে। পথচলতি মানুষের চোখেও যাতে আইটেমগুলো চোখে পড়ে সেভাবে সাজাতে হবে। কেক পেস্ট্রির জন্য Display fridge লাগবে। তাছাড়া সাজিয়ে রাখার জন্য স্বচ্ছ কাচের তাক। আইটেম অনুযায়ী সাজাতে হবে। কাউন্টার থেকে প্যাকেটে ভরা ও পরিবেশনের জন্য স্টীলের চিমটে ব্যবহার করলে গ্রাহকে তৃপ্তিহাতে গ্রাভস দরকারে।

 

.  POS (Point of Sale software) & Billing Software

        এর দ্বারা শুধু বিলিংই হয় না, মজুতের হিসাব মানে পুরো Inventory management-ও করা যায়। যেহেতু খাবার দাবার বেশিদিন ভালো থাকে না, তাই POS software কেনার সময় সেখানে যাতে প্রতিটি আইটেমের shelf life ও যথোপযু্ক্ত Inventory management-এর ব্যবস্থা থাকে, সেটা দেখতে হবে। নিজেদের মধ্যে এমন প্যাকেজ বানাতে পারলে তাকেই অর্ডার দেওয়া যেতে পারে, বিনা পয়সায় বানিয়ে দিলে আরও ভালো, অথবা কিনতে হবে।

        বাজারে দাম মোটামুটি ৩০,০০০ টাকা থেকে শুরু। বেকারির জন্য POS software সম্পর্কে বিশদ নির্দেশিকা অনুসরণ করেই এগোনো উচিত। নেটে বিনামূল্যে ডেমোও আছে।

 

. বিপণন ও নামকরণ (Marketing & Branding)

 আজকের বিজ্ঞাপনের যুগে শুধু ভালো মানের জিনিস তৈরি করলেই হল না। ভালোভাবে মার্কেটিং করা দরকার। এজন্য

. উপযুক্ত ব্র্যান্ড নেম

. পাউরুটি ইত্যাদির জন্য আকর্ষণীয় উন্নত প্যাকেজিং

. চোখে পড়ার মতো ভেতরে আলো লাগানি ডিসপ্লে বোর্ড যেটা তৈরি করতে ২০০০০-২৫০০০ টাকাও খরচ হতে পারে।

. একটা সুন্দরভাবে মেনু কার্ড

. প্যামফ্লেট বিলি করে সম্ভাব্য গ্রাহকদের জানানো। প্রথম মাসে সম্ভব হলে ২০,০০০-৩০,০০০ প্যামফ্লেট বিলি করার পরামর্শ দেখেছি। ভালো কাগজ হলে এক একটার দাম ১টাকা করে পড়ে যায়। সস্তাও করা যায়। আমরা কম করেও শুরু করতে পারি, যেহেতু প্রথমটায় চেনা গ্রাহকদের পাওয়া যাবে আশা করছি।

. যদি পোষায় ও পুরোদস্তুর রেস্টুরেন্ট খোলা হয়, তাহলে আলাদা restaurant management software কিনে গ্রাহক পরিসংখ্যান কাজে লাগিয়ে মার্কেটিং ক্যাম্পেইন করা যায়। সেটা নিয়ে আমার মতে পরেও ভাবা যায়।

এর জন্যও বিশেষজ্ঞ আছে। তবে শেষেরটি ছাড়া বাকিটা নিজেরাই করে ফেলতে পারি। আমি নিজেও কতগুলো ডিজাইন ভেবে রেখেছি।

 

. কর্মীদের পোশাক:

 এটা যদিও প্রায়ই উপেক্ষা করা হয়, তবে এর প্রয়োজন আছে। লুঙ্গি পরে রান্না বা পরিবেশন করলে নিশ্চয়ই স্বস্তিদায়ক হয় না। কাজের সুবিধা ও স্বাস্থ্যকর পরিচ্ছন্নতার পাশাপশি একটা পেশাদার দেখনদারিরও ব্যাপার আছে। রান্না যারা করবে তাদের মাথায় টুপি ও অ্যাপ্রন আবশ্যিক। যারা পরিবেশন করবে তারাও অ্যাপ্রন পরলে ভালোগ্লাভস্‌ পরে থাকলে দেখে স্বস্তি, জরুরি নয়। রাঁধুনি ও কাউন্টার সেলল্‌সে যারা থাকবে, তাদের পোশাক একরকম হবে না। কিছু চিন্তাভাবনা আছে, যদি শুরু হয়, তখন বলব। 

 

১০. অন্যান্য

. যোগাযোগের নম্বর। অন্তত দুটি মোবাইলের পাশাপাশি একটি ল্যান্ডলাইন থাকলে বাড়তি সুবিধা। এর জন্য নিজেদের ফোনই যথেষ্ট, অতিরিক্ত কেনার দরকার নেই।

. অনলাইন অর্ডার করার জন্য নিজস্ব bakery’s website থাকা জরুরি। তাতে যেন Order Online’ widget থাকে যাতে অনলাইন গ্রাহকদের টানা যায়। এইরকম ওয়েবসাইট পেশাদার কাউকে দিয়ে বানাতে ১০,০০০ টাকা মতো লাগতে পারে। আমাদের এতজন আইটি বিশেষজ্ঞ থাকতে মনে হয় দরকার পড়বে না। সঙ্গে Online Ordering App তৈরি করা গেলে তো কথাই নেই। 

   

 “If baking is any labor at all, it’s a labor of love. A love that gets passed from generation to generation”- Anonymous.

 

 


Post a Comment

Previous Post Next Post